চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম কি? চিয়া সিড এর কি কি উপকারিতা রয়েছে?





আমার অনেকেই জানি না চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম কি! সঠিক নিয়মে চিয়া বীজ খেতে না পারলে চিয়া সিড এর উপকারিতার পরিবর্তে অপকারিতা হওয়ার সম্ভবনা থাকে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে এই সুপারফুড  মাত্রাতিরিক্ত সেবনের ফলে পড়তে পারেন আপনি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে।

চিয়া সিড কি?


চিয়া সিড হল ছোট বীজমালা যার বৈজ্ঞানিক নাম "Salvia hispanica" . চিয়া সিডের প্রাকৃতিক রং সাধারণ ভাবে কালো বা সাদা হয়ে থাকে, এটি  ভিজে যাওয়ার পরে কয়েক গুণ ওজন বেড়ে যায়। বেলে দোআঁশ মাটিতে এই ফসল ভালো জন্মে। নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে চিয়ার বীজ রোপণ করা হয় এবং মার্চের শেষ থেকে এপ্রিলের মধ্যে ফসল তোলা যায়। এই

গাছ 3 ফুটের একটু বেশি উচ্চতায় পৌঁছায় তবে রোপণের তারতম্যের ফলে কিছুটা পার্থক্য হতে পারে। 

চিয়া সিড অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং তা অ্যালা ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড, ফাইবার, প্রোটিন, ভিটামিন,ও অন্যান্য পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে।


চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম

  • চিয়া সিড এক ধরনের স্বাদ ও গন্ধবিহীন  খাবার। তাই এটা খাওয়ার জন্য রান্না করারও দরকার হয় না। পানিতে ভিজিয়ে সহজেই খাওয়া যায় এটি।
  • চাইলে ওটস, পুডিং, জুস ইত্যাদির খাদ্যের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া যায়। এ ছাড়াও চাইলে টকদই, রান্না করা সবজি বা সালাদের ওপরে ছড়িয়েও খেতে পারেন।
  • চিয়া সিড স্বাদ ও গন্ধবিহীন হওয়ার কারণে এটা সব ধরনের খাবারের সাথে মিশিয়ে খাওয়ার উপযুক্ত।
  • চিয়া সিড কুসুম গরম পানিতে ২০ থেকে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে অথবা রাতে ঘুমানোর আগে খেয়ে নিতে পারেন।
  • চাইলে বিভিন্ন ধরনের স্মুদি রেসিপি বানিয়ে খাওয়া যায় এটি। যেমন টক দই, চিয়া সিড ও শসা দিয়ে স্মুথি বানিয়ে বিকেলে নাশতা হিসেবে খাওয়া যেতে পারে এই সুপারফুডটি।
  • ২ কাপ নারকেলের পানির সঙ্গে পছন্দের ফলের রসের সঙ্গে ২ থেকে ৩ টেবিল চামচ চিয়া বীজ দিয়ে মিশ্রণ বানিয়ে নিন। প্রয়োজনে পানিও যোগ করতে পারেন। ২০ থেকে ৩০ মিনিট রেখে খেয়ে নিন।
  • চিয়া সিড একটি প্রাকৃতিক এবং পুষ্টিকর উপাদান, তাই  এটি শুধুমাত্র অন্যান্য খাবারের সাথে মিলিয়ে
  • খাওয়া উচিতএবং অতিরিক্ত পরিমাণে না খাওয়া উচিত।

চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা


চিয়া সিড একটি প্রাকৃতিক সুপারফুড হিসেবে পরিচিত, এবং এটি অনেক গুণাবলী উপকারিতা ধারণ করে। চিয়া সিড এর প্রধান উপকারিতা নিম্নলিখিতভাবে উল্লেখযোগ্য:

  • পুষ্টিবিদদের মতে দিনে ১/২ চা চামচ চিয়া সিড শরীরের শক্তি দেয় এবং কর্মক্ষমতা বাড়ায়। চিয়া সিড সেবনের ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করে।
  • মেটাবলিক সিস্টেমকে উন্নত করার মাধ্যমে চিয়া সীড ওজন কমাতে সহায়তা করে। 
  • চিয়া বীজ রক্তে চিনির প্রবাহ স্বাভাবিক রাখে ফলে ডায়বেটিসের ঝুঁকি কম থাকে। 
  • এটা সেবনের ফলে পেটের প্রদাহজনিত বা গ্যাসের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। 
  • চিয়া বীজ হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় দারুণ কাজ করে। কেননা না  এতে আছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম। 
  • চিয়া সিড হজমে সহায়তা করে।
  • এটি শরীর থেকে টক্সিন (বিষাক্ত পদার্থ) বের করে দিতে সাহায্য করে।
  • চিয়া বীজ হাঁটু ও জয়েন্টের ব্যথা দূর করে।
  • এটি ত্বক, চুল ও নখ সুন্দর রাখে।
  • প্রোটিনের উৎস: চিয়া সিড অতিরিক্ত প্রোটিন ধারণ করে, যা শরীরের প্রোটিন প্রয়োজন পূরণ করে এবং মাংসপেশী প্রতিস্থান করে।
  • ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম: চিয়া সিড ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামের উৎস হিসেবে কাজ করে, যা হড়তে স্থিরতা এবং অন্যান্য শারীরিক কাজে গুরুত্বপূর্ণ।

ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম


দ্রুত ওজন কমাতে চিয়া সীড কার্যকর ভূমিকা রাখে তবে অবশ্যই কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। চিয়া সিড খাওয়ার পাশা পাশি সঠিক খাবার এবং শারীরিক ব্যায়াম করা খুবই জরুরি, তাই চিয়া সীডখাওয়ার পাশাপাশি প্রতিদিন ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন।


চিয়া সিড স্বতন্ত্রভাবে ওজন কমানোর জন্য কোনো জাদুকর কৌশল নয়। এই সিড খাওয়ার নিয়ম বিষয় পুষ্টিবিদ সৈয়দা শিরিনা স্মৃতি জানান, দ্রুত ওজন কমাতে সকালে খালি পেটে ও রাতে ঘুমানোর আগে ১ গ্লাস পানির মধ্যে ২চা চামচ চিয়া সিড ও ২ চামচ লেবুর রস মিশিয়ে খেলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে। 

খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে পানিতে সাধারণ তাপমাত্রায় ভিজিয়ে রাখতে হবে। ওজন কমানোর জন্য শুধুমাত্র চিয়া সিড খাওয়া যথেষ্ট নয়, তবে এটি স্বাস্থ্যকর খাবারের একটি অংশ হিসেবে কাজ করে।সবসময় সতর্ক থাকুন এবং প্রফেশনাল স্বাস্থ্য পরামর্শকে অনুসরণ করুন।

চিয়া সিড খাওয়ার অপকারিতা

  • বেশি পরিমাণে খাওয়া: অতিরিক্ত পরিমাণে চিয়া সিড খাওয়ার ক্ষেত্রে পাঁচজনে সমস্যা, পাকস্থলী ব্যথা এবং গ্যাসের সমস্যা হতে পারে।
  • ড্রাগ ইন্টারেকশন: চিয়া সিড এর কিছু উপাদান কিছু মেডিসিনের সাথে সংযোগিত হয়ে থাকতে পারে, যা মেডিসিনের প্রভাব বা দ্বিগুণ করতে পারে তাই এই বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
  • অ্যালার্জি: কিছু মানুষের চিয়া সিডের প্রতি অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া উত্থান হতে পারে।
  • গর্ভাবস্থা ও শিশুর সাথে: গর্ভাবস্থা ও শিশুদের সাথে চিয়া সিডের ব্যবহারের জন্য নিশ্চিত নির্দেশনা নিতে হবে। অতিরিক্ত পরিমাণে চিয়া সিড খাওয়া গর্ভাবস্থায় অসুস্থতা উৎপন্ন করতে পারে।


চিয়া সিড কতদিন খাওয়া উচিত?

চিয়া সিড একটি সুস্বাস্থ্য খাবার এবং প্রচুর প্রমাণে পুষ্টিকর উপাদান ধারণ করে। তবে, চিয়া সিড অন্য পুষ্টিগুণ খাবারের মতো এটাও কিছু নিয়ম মেনে খাওয়া উচিৎ। চিয়া সিড খাওয়ার উপযুক্ত মাত্রা বা সময়ের ক্ষেত্রে,মূলত এটির নির্দিষ্ট সীমা নেই। তবে, চিয়া সিড কিভাবে এবং কতদিন খাবেন তা নির্ভর করে অনেক কারণেরউপর তার মধ্যে প্রধান তার স্বাস্থ্য অবস্থা, উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরলের স্তর, ডায়াবেটিস, গর্ভাবস্থা, শিশুরসাথে গভীর যোগাযোগ এবং অন্যান্য সমস্যার উপর। গর্ভাবস্থা বা শিশু অবস্থায় কম খাওয়া উচিৎ। শরীর দুর্বলবা পেটে গ্যাসের সমস্যা থাকলে, আপনি যদি প্রাপ্ত বয়স্ক হয়ে থাকেন থাহলে নিয়ম করে ভালো না হওয়াপর্যন্ত খেতে পারেন। 

এর পরেও আপনি চিয়া সিড এর ব্যবহার সূত্রাংশ, উপযুক্ত মাত্রা এবং সময় নির্ধারণ করার জন্য ডাক্তারেরসাথে পরামর্শ করতে পারেন। তাদের পরামর্শ অনুসারে আপনি চিয়া সিড নির্ধারিত পরিমাণ এবং সময়সূচীতেব্যবহার করতে পারেন।

কাতিলা গামের উপকারিতা ও খাওয়ার সঠিক নিয়ম

সজনে পাতার উপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম


Post a Comment

Previous Post Next Post